উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সংকট মারাতœক আকার ধারণ করেছে। দৈনিক অসংখ্য রোগী কাউন্টার থেকে টিকেট পেলেও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। এনজিও সংস্থা আইওএম’র নিয়োগকৃত ৩/৪ জন চিকিৎসক থাকলেও তারা রোহিঙ্গা রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এনিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও এনজিও চিকিৎসকদের মধ্যে মতবিরোধ চরমে উঠেছে। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মচারী প্রত্যক্ষদর্শী সরওয়ার আলম জানান, আইওএম’র নিয়োগকৃত চিকিৎসকেরা রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে স্থানীয় রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। প্রতিদিন অসংখ্য স্থানীয় রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, আউটডোরে অসংখ্য মহিলা ও শিশু রোগী টিকেট নিয়ে বসে আছে। কয়েক জন মহিলা জানান, টিকের দাম ৩ টাকা হলেও আমাদের কাছ থেকে নিচ্ছে ৫ টাকা করে। ২ টাকা ফেরৎ চাইলেও উল্টো কথা না বাড়ানোর জন্য ধমকি প্রদান করে।
এ সময় হরিণমারা গ্রামের গৃহবধু আছিয়া খাতুন জানান, তার ছেলে ছৈয়দুর রহমান (৭) গায়ে প্রচন্ড জ্বর। আইওএম’র ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি বললেন, বাইরে অপেক্ষা করতে। এভাবে বেশ কয়েকজন রোগী অভিযোগ করে বলেন, রোহিঙ্গা রোগী আসলে আইওএম’র চিকিৎসকেরা তাদের চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়ে তাৎক্ষণিক বিদায় করেন। আর স্থানীয় রোগী আসলে তাদের অপেক্ষা করতে বলেন।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে আইওএম’র চিকিৎসক আব্দুল আহাদ জানান, রোহিঙ্গাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে স্থানীয় রোগিদেরও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। হাসপাতাল থেকে কেউ যেন চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে না হয় সেজন্য তারা তৎপর রয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
আইওএম’র প্রোগ্রাম অফিসার মহি উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শুধু মাত্র রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে যেসব রোগী আসে সবাইকে চিকিৎসা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তিনি রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বস্ত করেন।
হাসপাতাল ঘুরে দায়িত্বরত কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে ১২ জন চিকিৎসকের স্থলে ডাঃ রাজেদুল ইসলাম ছাড়া আর কেউ নেই। অন্যান্য চিকিৎসকেরা কেন আসে না জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারী জানান, তারা বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তারা হলেন, ডাক্তার রবি, আবুল কালাম আজাদ, সুমন দাশ। অভিযুক্ত ডাক্তার রবি জানালেন, আমি হাসপাতালের কার্যক্রম ছেড়ে প্রাইভেট চিকিৎসা করি। আবুল কালাম ও সুমন দাশের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। দুপুর থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ডাক্তার কমলিকা রোগী দেখাশুনা করবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিজবাহ উদ্দিন জানান, এখানে কোন চিকিৎসক বদলী হয়ে আসলে থাকতে চায় না। কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ হাসপাতালে কোন বাউন্ডারি না থাকায় দুর্বৃত্তদের বেপরোয়া আচরণ ও অশালীন ব্যবহারসহ নানা কারণে চিকিৎসকেরা বদলী হয়ে অন্যত্রে চলে যান। তিনি বলেন, সম্প্রতি হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ড থেকে একজন স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে গণর্ধষণের ঘটনার পর থেকে চিকিৎসকেরা এখানে দায়িত্ব পালন করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সিভিল সার্জন পচুনু জানান, উখিয়া হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাবে ডাক্তাররা থাকতে চাই না। তবে যারা কর্মরত রয়েছে তারা কেন প্রাইভেট ক্লিনিকে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
#################
উখিয়ায় জাতীয় আরসিএ প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু
ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::
কক্সবাজারে উখিয়ায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের আয়োজনে ৪ দিন ব্যাপী জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে। ৩ এপ্রিল (সোমবার) সকাল ৯টায় আর্ন্তজাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও আঞ্চলিক সহযোগী চুক্তি সংস্থার (আরসিএ) যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজারের ইনানীর রয়েল টিউলিপ সী পার্ল রিসোর্টে ৩৯তম সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. নাঈয়ুম চৌধুরী এবং টিসি এশিয়া ও প্যাসিফিক পরিচালক নাজাত মোক্তার। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মনজুরুল হক। ডঃ আলেয়া বেগম, ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশে আনবিক শক্তি কমিশনকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী অবদান রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত: ড. ওয়াজেদ মিয়ার।সম্মেলনে বাংলাদেশ সহ ১৯ দেশের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়া, কলম্বিয়া, চীন, ফিজি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাও এফডিআর, মালেয়শিয়া, মঙ্গোলিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রিপাবলিক অব কোরিয়া, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, আরসিএ আরও কোরিয়া, আরসিএ পিএসি অষ্ট্রেলিয়া। প্রথম দিনের সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেনি ৩ দেশের মধ্যে জাপান, ফালাও, সিঙ্গাপুর। চারদিনের এই সম্মেলনে প্রতিনিধিদের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। আগামী ৬ এপ্রিল সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
পাঠকের মতামত: